কবি মো: ফজলুল হকের কবিতায় ‘কীর্তিনাশা’ ও অন্যান্য || ইয়াসিন আযীয

কবি মো: ফজলুল হকের কবিতায় কীর্তিনাশাও অন্যান্য

ইয়াসিন আযীয


 

নদী মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। তাই সভ্যতাগুলোকে নদীকেন্দ্রিক গড়ে উঠতে দেখতে পাই। প্রাচীন যুগ থেকে সভ্যতা, শহর তথা মানুষের আবাসস্থল গড়ে উঠেছে নদীকে আশ্রয় করে। মানুষের যাপিত জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা নদীকে নিয়ে কবি-সাহিত্যিকগণ বিখ্যাত সব সাহিত্য রচনা করেছেন। কবি মো: ফজলুল হক তাঁদেরই একজন। শরীয়তপুর জেলার মাঝখানদিয়ে বয়ে যাওয়া ‘কীর্তিনাশা নদী’ একেঁবেঁকে বয়ে গেছে তাঁর বাড়ির পাশদিয়ে। সকাল সাঝেঁ চোখ মেলে দেখতে পাওয়া কীর্তিনাশা বার বার উঠে এসেছে তাঁর অসংখ্য কবিতায়। একটি কবিতায় ঘুরেফিরে আট বার এসেছে কীর্তিনাশার নাম। কবি মো: ফজলুল হকের জন্ম ১৫ জুলাই, ১৯৬৯ খ্রি: শরীয়তপুর জেলার পালং থানাধীন প্রসিদ্ধ কাশিপুর গ্রামে। পেশায় একজন শিক্ষক হলেও নেশায় একজন কবিতা চাষি! এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা চারটি। আংগারিয়া হাইস্কুলে পড়ার সময় কীর্তিনাশা নদী পার হয়ে প্রতিদিন যেতে আসতে হয়েছে তাঁকে। তাঁর শৈশবের অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে আছে কীর্তিনাশার সাথে। তাই তো তিনি তাঁর বহতা নদীর কথাকবিতায় লিখেন

 

এইতো আমার কীর্তিনাশা,

বাল্যবেলার স্মৃতির জলধারা।

অফুরান স্মৃতির জোনাকি এখনো

এখানে পাখনা ছড়ায় অক্লেশ অরুণিমায়।

দুরন্ত কৈশোর এখনও এখানে মুখর হয়

অবিনাশী সুরের ঝংকারে।

অতঃপর অতি সন্তর্পণে কীর্তিনাশার দুইকূলে যখন সন্ধ্যা নামে, থেমে যায় সব কোলাহল। শুধু বয়ে চলে শান্ত জলের নির্নিমেষ ধারা নৈঃশব্দের মৌনতায়, তখন কবির বুকের গহনে জাগে আরেক কীর্তিনাশা ডুকরে ওঠে কবির হৃদয়—‘আহা কৈশোর! আহা কীর্তিনাশা!’ কারণ কীর্তিনাশার কাছেই জমা আছে কবির দিনমান ডুবসাঁতারের খেলার স্মৃতি, অবারিত নতুন স্বপ্ন। কীর্তিনাশার কাছেই জমা আছে দুরন্ত দস্যিপনা, উঁকি দেয়া যৌবনের সূচনা প্রহর। জমা আছে একমুঠো সোনালি সকাল, কচি রোদের ঘ্রাণ, কিশোর বুকের দিশেহারা প্রেম। এভাবেই কীর্তিনাশা কবি মো: ফজলুল হকের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কীর্তিনাশা যেন তাঁর প্রেম, ভালোবাসা, আনন্দ বেদনা, হাসিকান্না। কীর্তিনাশা যেন তার প্রেমিকার স্বরুপ, প্রেমিকার আরেক নাম। তাঁর বাড়ির পাশদিয়ে এবং বুকের ভেতরে যেন দুটি কীর্তিনাশা সমান্তরাল বয়ে চলে! তাই তো কবি বহতা নদীর কথাকবিতার অন্যত্র লিখেন

 

স্মৃতির পাপিয়ারা পাখা মেলে বুকের ভেতর,

অনিবার্য আবেগের স্রোতে ঝুরঝুর পাড় ভাঙে

বুকের গভীরে বয়ে চলা আরেক কীর্তিনাশা।

বিকেলের সব রঙ ঢেকে দেয় ধূসর গোধূলি,

মুছে নেয় জীবনের কুলীন ক্যানভাস।

কীর্তিনাশা’, ‘কবিতাএবং তুমিএই তিনটি শব্দ বা বিষয় মো: ফজলুল হকের কবিতায় বার বার ফিরে ফিরে এসেছে। তিনটি বিষয় কখনো একই, কখনো আলাদা সত্তা, কখনো একে অপরের পরিপূরক। কবি নিজেই তাঁর একটি কবিতার জন্য কাব্যগ্রন্থের শুরুতে স্বীকার করেছেনমনের মাধুরী যেখানেই মেশাই, সে-ই হয়ে যায় আমার তুমি, সে-ই হয় কবিতা।সে-তুমিআর কবিতার অঙ্গে জড়াজড়ি করে মিশে আছে কীর্তিনাশা। কীর্তিনাশাকে ছাড়া যেন তুমিকিংবা কবিতার কোনো অস্তিত্ব নেই। তাই-তো কবি অবলীলায় বলে যানকীর্তিনাশার শান্ত স্রোতে ভেসে যায় ভালোবাসার অমিয়ধারা, অনাবিল প্রেম, মলিন কাগজে আঁকা জীবনের জলছবি। কীর্তিনাশা ভাসিয়ে নেয় গোলাপের ঝাড়, সবুজ বনানী, অস্ফুট আশা, মুঠো মুঠো কালোটিপ। ভাসিয়ে নেয় অমলিন প্রেমের ইশতিহার। কীর্তিনাশা! কীর্তিনাশা তুমিই ভেঙেছ আশার বসতি বাসনা বিলাস। কীর্তিনাশা তবু জেগে থাকে মৃন্ময় স্মৃতির মোহনায় অবিনশ্বর রূপে!’ কারণ কীর্তিনাশা যেতে যেতে বলেছিল আবার আসবে ফিরে।

 

কীর্তিনাশার উম্মাতাল স্রোত যেতে যেতে বলেছিলো,

আমার অনিবার্য যাত্রায় ভেঙ্গেছে যে ঘর,

আশার বসতি, তটিনীর কোল,

আমি ফিরে আসবো সেই স্নিগ্ধ বেলার কাছে।

গড়ে দেবো নতুন আবাস।

তারপর কত আষাঢ় শ্রাবণ গেলো আসলো,

তিমিরস্নাত পাহাড়ের কোল কতোবার নদী হলো।

কিন্তু সেই স্রোত আর ফেরেনি।

 

ওপরের কবিতায় দেখতে পাই সুনীল গঙ্গোপধ্যায়ের বিখ্যাত কবিতা কেউ কথা রাখেনির আদলে গড়া কবির আদতে ফেরেনা কিছুইকবিতায় কীর্তিনাশাও কথা রাখেনি। অপরদিকে এক জীবনের ব্যবচ্ছেদকবিতায় দেখতে পাই কবি মেঘের কাছে শিখেছেন কেমন করে ফিরে আসতে হয় বাষ্প থেকে জীবনের গল্পে।

 

আমি মেঘের কাছে শিখেছি,

কেমন করে ফিরে আসতে হয় বাষ্প থেকে জীবনের গল্পে।

এই সেদিনও কীর্তিনাশার জল টলটলে স্বচ্ছ ছিলো,

বর্ষায় পাল্টে গেলো স্বচ্ছ জলের রঙ, স্রোতের ধারা।

 

মো: ফজলুল হকের কাছে কবিতা অসীম আকাশ অগণন নক্ষত্র বীথি। কবিতার হাত ধরে তিনি হেঁটে চলেছেন মহাকালের মহাকাশে অনন্ত সীমানা ধরে। নীল পাহাড়ের লাল অরণ্যে তাঁর নিত্য বসবাস। জোছনারা সেখানে আঁচল পাতে অনুভবের বিস্তীর্ণ উঠোন জুড়ে। যেখানে আকাঙ্ক্ষার গর্ভজাত বৈচিত্র্যে রোপিত হয় স্বপ্নের বীজ। বুকের গভীরে বিস্তৃত হয় গাঙচিলের ডানা। কাল থেকে মহাকাল নিঃসীম নীলিমার ভাঁজে ভাঁজে অযুত নিযুত পারিজাত ভুবন। সেখানে তিনি হাঁটছেন, কেবলই হেঁটে চলছেন কাঙ্ক্ষিত কবিতার খোঁজে অনন্তকাল ধরে। প্রকৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গ কবিকে পৌঁছে দেয় সেই কাঙ্ক্ষিত কবিতার খোঁজে। মেঘ আর মনকবিতায় দেখি বৃষ্টিরা ব্যালকনির টিনের ছাদে টুপটাপ ছন্ধ তুলতেই কবির মনের গহনে জাগে অজস্র কল্লোল। তার প্রকাশ ঘটেছে এভাবে

 

যদি বৃষ্টিরা এভাবেই আসে

আমার ব্যালকনির টিনের ছাদে

টুপটাপ টুপটাপ মাদলের ছন্দে,

এভাবেই কাঁদে যদি রাতের আকাশ 

দয়িতার বিষণ্ণ বিরহে!

যদি ভাসে নবজলে ক্ষয়িষ্ণু উঠোন, আমলকী বন।

ডুবে যায় কালো পিচ, সর্পিল পথ।

যদি নববর্ষার অবগাহনে

প্রাণ পায় কীর্তিনাশার স্রোত,

তবে, আমার মনের গহনে জাগবেই জানি অজস্র কল্লোল।

 

যারা প্রেমবিরহের কবিতা পড়তে ভালোবাসেন তাদের জন্য কবি মো: ফজলুল হকের কবিতায় রয়েছে প্রয়োজনীয় সমস্ত রসদ। তাঁর কবিতা পাঠে প্রেমিক হৃদয়ে ভালোবাসার দূরতম দ্বীপের মিষ্টি জলে সলিল সমাধি হবে! সেখানে ঝরঝর সহজিয়া সুরের মতো স্বর্গীয় অনুরণে বয়ে চলে অচেনা মায়াবী ঝংকার। তারাদের জ্বলা-নেভা আর কুয়াশার সজাল সাতার কেটে অনন্ত কাল ধরে বসে থাকতে চাইবে কবিতাকথনের অসম্ভব বাস্তবতায়! যে সকল প্রেমবিরহের কবিতায়ও বর্ণিত হয়েছে স্রোতঃস্বিনী কীর্তনাশার চঞ্চলা অমিয় স্রোতের ধারাসহ বিভিন্ন বর্ণনা। বর্ণিত হয়েছে তুমিতে মিলনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা। তাইতো বিবর্ণ জোছনাধারাকবিতায় প্রলম্বিত হওয়া বেদনার্ত রাতের প্রহরে কীর্তিনাশার কালো জলে আধখানা চাঁদ আর আধখানা মুখ মিলেমিশে একাকার।

 

অতঃপর প্রলম্বিত হয়ে যায় বেদনার্ত রাতের প্রহর।

কীর্তিনাশার কালোজলে তখনো মুখ দেখে আধখানা চাঁদ।

জমানো স্বপ্নের ভ্রূণ বুঝি প্রাণ পায় আধখানা দেহে,

কুঞ্চিত বেদনার হলাহলে নীল হয় শুভ্র শেফালি।

আধখানা মুখ তবু জেগে থাকে কুয়াশার অভ্র আবরণে।

আধখানা চাঁদ তবু জোছনা বিলোয়,

আধখানা মুখ বুঝি হয়ে যায় আধখানা চাঁদ।

 

অবিনাশী সাধ আমারএবং জেগে থাকি স্বপ্নভূককবিতায় দেখতে পাই কবির হৃদয়াবেগ ফুলেফেঁপে হয়ে যায় বর্ষার নদী। কবি তখন আকাশবিলাসী, জোছনাবিলাসী, বৃষ্টিবিলাসী রং-হারানো অদ্ভুত পাতাবাহার। কবি তখন জেগে থাকেন স্বপ্নভূক এক আজন্ম নিশিখোর। অপরদিকে তখন কীর্তনাশার কূলে কূলে পাড়ভাঙা সুর, কীর্তিনাশার দুকূল ছাপানো কষ্টের জোয়ার। প্রান্তবেলার ডাককবিতায়ও আমরা একই সুর দেখতে পাই

 

জারুল বনে উঠলো বুঝি ঘূর্ণি হাওয়ার তোড়

দুরন্ত মেঘ, মাতাল হাওয়ায় আকাশ ঘনঘোর।

বান ডেকেছে কীর্তিনাশায়, দুকূল ভেসে যায়

স্রোতের তোড়ে হৃদয় ভাসে, বেলায় অবেলায়।

ডাকছে নদী হাত বাড়িয়ে ভালোবাসার গানে,

হৃদয় ভেজে বাঁশির বোলে দোল লেগেছে প্রাণে।

 

তুমিচলে গেলে অন্তলীন অভিমান পুষে বুকেবসন্তেও কবি হৃদয়ে বিরহের সুর, কীর্তিনাশা লণ্ডভণ্ড করে আশার বসতি যা দেখতে পাই বসন্তে বিরহ তুমিকবিতায়

 

একদা উত্তুঙ্গ ছিলো উন্মনা মন,

চপল হৃদয়।

একদা মুখর ছিলো অতৃপ্ত অন্তর।

তারপর বান এলো কীর্তিনাশার কূলে,

লণ্ডভণ্ড আশার বসতি।

তুমি চলে গেলে অন্তলীন অভিমান পুষে বুকে।

 

ফেলে আসা প্রেম কিংবা হারিয়ে যাওয়া কবিতার খাতার জন্য কবির কোনোই পিছুটান নেই বললেও আমরা দেখতে পাইনিভৃত নিশীথে মেঘবালিকার পেলব দেহ ছুঁয়ে দেখার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষায় বেড়েছে রাতের দৈর্ঘ্য কিংবা প্রিয়তমাসু, তোমার জন্যই বুকের মধ্যে পুষে রাখি শীতল জলাধারা, মনের গহনে বহে নদী নিরন্তরএর মতো আক্ষেপ। সংশয় ভরা দুঃসময় কেটে গেলে আরেক স্বপ্নকবিতায় তুমিকে আহ্বান করছেন এভাবে

 

যদি বেজে ওঠে থেমে যাওয়া বাঁশি, থামে যদি কান্নার রোল

যদি প্রাণ পায় মরে যাওয়া নদী, ভাসে যদি কীর্তিনাশার কোল।

যদি ধ্বনি ওঠে জীবন জয়ের, যদি চলে যায় ভয়াল দুঃসময়,

যদি ফোটে ফুল আগের মতোন, যদি মুছে যায় সব সংশয়।

তবে তুমি এসো সিঁদুর সন্ধ্যা বেলা,’

 

এছাড়াও ফিরে এসো নীলপরীকবিতায় আমরা দেখতে পাই প্রজাপতি, নীল প্রজাপতির জন্য কবির আক্ষেপআহা নীল প্রজাপতি!’ আসন্ন ঝড়ের কল্পিত পূর্বাভাসে জীবনের অথৈই বৈভব ফেলে, যে চলে গেছ কোনো এক কুহেলি কাঞ্চনের অন্বেষণে। অথচ যার জন্য কীর্তিনাশার কলতানসহ কত কিছুই না সাজিয়ে রেখেছিলেন কবি

 

তোমার জন্য রাখা ছিল মাঠের সবুজ,

বৃক্ষের ছায়া, কীর্তিনাশার কলতান।

তোমার জন্য রাখা ছিল মেঘের বাহন,

মুঠো মুঠো কালোটিপ, বৃষ্টির সুর, বেহুলার প্রেম।

রাখা ছিল সবুজ গুল্মো ছাওয়া পরিকুঞ্জ।

 

কবি মো: ফজলুল হক তাঁর কবিতায় জীবনানন্দের শব্দকে ঝেড়ে ফেলতে পারেননি। জীবনানন্দের কবিতার অসংখ্য শব্দ একাধিকবার ব্যবহৃত হয়েছে তাঁর বিভিন্ন কবিতায়। এছাড়াও তাঁর অনেক কবিতা শব্দে, বাক্যে এবং উপমায় একটি আরেকটির প্রায় কাছাকাছি, একটি আরেকটির সাথে সম্পর্কিতখুব সহজে যাকে আলাদা করা যায় না। যেখানে কবি তাঁর কবিতায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই শব্দ ব্যববহার করেছেন। যা পাঠকের কাছে একঘেয়ে লাগতে পারে। যে সকল পাঠক প্রতিটি কবিতায় নতুন কিছু খুঁজতে চাইবেন তাদের কিছুটা হতাশ হতে হবে হয়তো। এর প্রধান কারণ কবিতাগুলো প্রেমবিরহের সাথে স্মৃতিকাতরতার মিশেলে বোনা হয়েছে। ফলে আমি তুমি, তুমি আমি কেন্দ্রিক সীমাবদ্ধতায় অনেক কবিতা আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিষয়গুলো অনেকের কাছে একঘেয়ে লাগলেওঘুরিয়ে ফিরিয়ে শব্দ, বাক্য, উপমার পুনরাবৃত্তি হলেও প্রতিটি চরণের পরতে পরতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের বর্ণনাযা তাঁর কবিতাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে নিজস্ব ঢং বা ধারার সৃষ্টি করেছে। পড়েই ফজলুল হকের কবিতা হিসেবে চিহিৃত করতে পারার, বুঝতে পারার সক্ষমতা দিয়েছে। যা একজন কবির কবিতা রচনার স্বার্থকতারই বহিঃপ্রকাশ।

 

তুমিকল্পিত ও আরাধ্য সত্তা হিসেবে তার অবস্থান কবি হৃদয়ে নিত্য জাগুরুক। তাই কবি অবলীলায় সেই তুমিকে বলে দেন আমার কাছে চিরকালই তোমার খবর নিও। বুকের খরায় কষ্ট রোপণ দুঃখ পাই তো পাব তবু তোমার কাছেই যাব, আমি তোমার কাছেই যাব।কখনো কবি তুমির জন্য তাঁর সর্বস্ব দিয়ে জানালাটা খুলে রাখেন—‘ভাবি, তুমি এসেছিলে, ভাবি, তুমি আবার আসবে...আমি লুটপাট হবার অপেক্ষায় জানালা খুলে রাখিঅপেক্ষায় থাকি।’ ‘তুমিসত্তাটি আলেয়ার প্রহলিকা হয়ে হারিয়ে যায়, না ধরা দেয়? কষ্ট রোপণ করে, দুঃখ পেয়ে কবি তাঁর কাঙ্ক্ষিত তুমির কাছে কবিতার হাত ধরে যেতে পারেন, না ব্যর্থ হনতা খুঁজে দেখতে নেই। কারণ কবিই বলেছেন কেনো কোনো পথে হেটে যাওয়ার কারণ থাকতে নেই, কেনো কোনো সম্পর্কের ব্যাখ্যা থাকতে নেই।তাই আমরাও খুঁজে দেখতে চাই না।

 

কবিতার নিরুদ্দেশ পথে পথে হেঁটে কবি খুঁজে ফিরছেন স্বপ্নিল কথামালা, খুঁজে ফিরছেন অহর্নিশ একটি অমর কবিতা। একটি কবিতার জন্য হাত পেতে তিনি ‘কীর্তিনাশা’ কিংবা ‘তুমি’র আশ্রয় করে বার বার কবিতার কাছেই ফিরে আসেন। তিনি কখনো চাননি যশস্বী কবি হতে। শুধু চেয়েছেন কবিতার ছন্দে মাতাতে মন, কবিতার গন্ধে রাঙাতে জীবন, শুধু চেয়েছেন কবিতার বন্ধনে বাঁধাপড়ে আসুক মরণ! কবির জন্মদিনে আমাদের প্রত্যাশা একটি অমর কবিতা তিনি লিখে নিবেন শব্দের মায়াময় বুনট বুননে। যে কবিতা পৌঁছে যাবে কীর্তিনাশা থেকে কাস্পিয়ান হ্রদ, বার্সোলনা থেকে শান্ত সুনসান বাফেলো পর্যন্ত। যে কবিতায় ঝড়ে পরবে দোয়েলের শিস, ঝরনার গান, সবুজ পল্লব, পুষ্পিত বন

 

লেখক: কবি, সাহিত্যিক ও প্রাক্তন শিক্ষক।

 

তথ্যসূত্র০১। কাব্যগ্রন্থএকটি কবিতার জন্য।

            ০২। কীর্তিনাশার কাব্যসংখ্যা : ০৬ বর্ষ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩ খ্রি:

            ০৩। https://www.facebook.com/h.fajlul?mibextid=ZbWKwL

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم