রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী ।। ইয়াসিন আযীয

নিবন্ধ


রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী                                                           

ইয়াসিন আযীয

 


“আমার জন্মদিন সীমাহীন সময়ের মহাসমুদ্রের স্রোতে মিশে

খ্যাতিহীন তারিখের হাত ধরে উদ্দাম মিছিলে পদচিহ্ন এঁকে দেয় ইতিহাসময়,

আকাশের তারাদের চোখে চোখে লিখে রাখে অজস্র বিস্ময়।”

 

ঠিক এ কথাগুলোই লেখা রয়েছে, কবি ও গদ্যকার রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরীর সমাধিস্থলে। তিনি ১৯২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর (১৩২৮ বাংলা ১১ পৌষ) বর্তমান শরীয়তপুর জেলার পালং উপজেলার দক্ষিণ বালুচরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামটির নামের বালু ও চরার মাঝে কিছুটা নতুনত্বের গন্ধ পাওয়া গেলেও গ্রামটি শত বছরেরও বেশি পুরানো। এর নীরব সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে রথীন্দ্রকান্তের দাদা রজনীকান্ত ঘটক চৌধুরীর নির্মিত দোতলা বাড়ি ও শান বাঁধানো পুকুর ঘাট। রজনীকান্ত এন্টাস পাস করার পর ঢাকার জর্জ কোর্টে ওকালতি করেন। তার পূর্ব পুরুষদের বাস ছিল বিক্রমপুরে। সর্বগ্রাসী পদ্মা তাদের ভিটেমাটি নিশ্চিহ্ন করে দেয়। এরপর তারা হাঁসের কান্দি নামক একটি গ্রামে আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য জায়গা খুঁজতে থাকেন। অবশেষে তারা এবং তাদের সাথে আসা ৭/৮টি পরিবারসহ পালং-এর বালুচরা গ্রামে আসেন। তখন এটি ছিল ঢাকা জেলার কলাগাছিয়া থানার অধীনে। বালুচরা গ্রামের নাম তখন ছিল কি-না জানা না গেলেও এই গ্রামে যে ভীষণ জঙ্গল ছিল এবং সেখানে বাঘ, বন্য শূকর ও অন্যান্য প্রাণীর অভয়ারণ্য ছিল তা জানা যায়। রথীন্দ্রকান্তের বাবা তার ডায়রিতে লিখেছিলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের বাড়ির উঠোনে রাতের বেলা প্রায়ই বাঘ শুয়ে থাকতে দেখেছি।’ রথীন্দ্রকান্তের বাবার নাম সূর্যকান্ত ঘটক চৌধুরী। মায়ের নাম রত্নাবালা দেবী। রথীন্দ্রকান্ত ১০ ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয়।

 

রজনীকান্ত ঢাকায় থাকলেও পূজার সময় বাড়ি আসতেন। পূজার বিভিন্ন সরঞ্জামাদি তিনি নৌযোগে আগেই পাঠিয়ে দিতেন। বিশেষ করে দুর্গাপূজার সময়। দুর্গাপূজার সময় প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হতো বাড়ির সামনের পুকুরে।............................................... বিলিন হওয়ায়..............................................।


[রথীন্দ্রকান্তের জীবন-দর্শন ও সাহিত্যের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে দু’টি দিক লক্ষ করা যায়। এক রবীন্দ্রনাথের উদার বিশ্ব মানবিক অনাড়ম্বর রুচিসিদ্ধতা, মানব হিতৈষীনা, স্বদেশানুরাগ, লোকায়ত ঐতিহ্যের প্রতি প্রগাঢ় অনুরাগ, সাহিত্যনিষ্ঠা এবং দায়িত্ববোধ। দুই মার্ক্সীয় দৃষ্টিভঙ্গি।]

 

বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত তাঁর জীবনীমূলক গ্রন্থে বাড়িটির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে ঠিক এভাবে—“চারিদিকে গাঢ় সবুজ নিসর্গ মাঝখানে ২৮ বিঘা জমির বিস্তৃতির মধ্যে দক্ষিণমুখী কারুকার্যময় এক রাজকীয় অট্ট্রালিকা। সামনে শান বাঁধানো ঘাটের পুকুর। পেছনে আরেকটি। পুরো বাড়িটি ঘিরে অজস্র গাছপালাময় বাগান। পেছনে অর্ধচন্দ্রকারে সীমানা ঘেঁষে বিস্তৃত ফসলের জমি।’’ রজনীকান্তের এ বাড়ি ছাড়াও ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে বাড়ি ছিল। কিন্তু তার পরিবারবর্গ এখানেই থাকতেন। কারণ, তার জমিদারী ছিল এ অঞ্চলে। রজনীকান্তের মৃত্যুর পর জমিদারীর ভার গ্রহণ করেন তার প্রথম স্ত্রী ক্ষিরোদা সুন্দরী।

 

বাল্যকাল থেকেই রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরীর মাঝে কবি প্রতিভা বা কবিতার প্রতি ঝোঁক লক্ষ করা যায় । যা আশ্চর্য এক ঘটনা থেকে প্রতিফলিত হয়। রথীন্দ্রকান্ত তখন তুলাসার স্কুলের ছাত্র। কবিতা ও ছন্দ নিয়ে বেশ ভাবেন। একদিন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘এবার ফেরাও মোরে’ কবিতাটি পড়তে গিয়ে, কবিতায় ব্যবহৃত ‘হৃৎপিণ্ড’ শব্দটির ছন্দমাত্রা ঠিক বুঝে ওঠতে পারলেন না। তিনি কালক্ষেপণ না করে চিঠির মাধ্যমে কবি গুরুকে জানালেন। কবি গুরু খুব উৎসাহের সাথে ‘হৃৎপিণ্ড’ শব্দের ছন্দমাত্রা বিশদ বুঝিয়ে, সুধীরচন্দ্র করের মাধ্যমে বালক রথীন্দ্রকান্তের চিঠির জবাব দেন। অজপাড়াগায়ের ছোট এক ছেলে যার চিঠির জবাব (এত) উৎসাহের সাথে দেয়ায় সুধীরচন্দ্র কর মনে মনে বিস্ময় প্রকাশ করেন। হয়ত কবি গুরু বালক রথীন্দ্রকান্তের মাঝে তার উত্তরসুরির ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন। এর কিছুদিন পরের ঘটনা। সময়টা ছিল ১৩৪০ সালের ৩০ পৌষ। রথীন্দ্রকান্তের বয়স মাত্র ১২। ঢাকার ৫নং শীশ দাস লেনে তাদের বাড়ির ছাদে লুকিয়ে ‘প্রার্থনা’ নামের একটি কবিতা লিখে ফেলেন। বাবা-মা জানতে পেরে বালক রথীন্দ্রকে উৎসাহ প্রদান করেন। কবিতাটি ছিল এরকম 


‘জানি না তোমার মহিমা

জানি না তোমায় কোথায় শেষ।

সলিলে, সাগরে স্থলেই তো তুমি

আবার কোথায় সরগে বাস

কেন আস তুমি কেন যাও আবার

সর্বদা থাকিবে ভুবন মাজার

কভু না যাইবে আর।

কেন থাক তুমি দুহার মাঝারে

হইয়ে পক্ক কেশ

জানি না তোমার কোথায় শেষ।’

 

রথীন্দ্রকান্ত ১৯৩৯ সালে তুলাসার স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। একই বছর জমিদার বাবা (সূর্যকান্ত ঘটক চৌধুরী) কিশোর রথীন্দ্রকান্তকে নিয়ে যান শান্তি নিকেতনে ভর্তি করানোর জন্য। সেখানে ১৯৩৯ থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত লেখাপড়া করেন এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। শান্তি নিকেতনে পড়ার সময়েই রথীন্দ্রকান্ত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সান্নিধ্য লাভ করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, রথীন্দ্রকান্তের বড় দাদা রবীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী তখন শান্তি নিকেতনেরই ছাত্র ছিলেন এবং তার অন্যতম সহপাঠিনী ছিলেন ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ও দেশ বরেণ্য নেত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী। রথীন্দ্রকান্ত বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বিএ পাস করেন এবং বিদ্যাসাগর কলেজে পড়ার সময়, কলকাতার জোড়া সাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবার অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবারের সাথে তার একটা বিশেষ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সময় তিনি রবীন্দ্র তিরোভারে প্রার্থনা সভায় নিয়মিত কবিতা পাঠে যোগ দিতেন।

 

রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী তার কর্মজীবন শুরু করেন চিকন্দী হাইস্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে। কিন্তু চিকন্দী তাদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে হওয়ায় এবং কীর্তিনাশা নদী পার হয়ে যেতে হয়, এ জন্য তিনি চিকন্দী হাইস্কুলের শিক্ষকতা ছেড়ে তুলাসার স্কুলে যোগ দেন। সেখানেই তিনি শেষ অবধি শিক্ষকতা করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৯৩৬ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে প্রথম তার লেখা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। যা ছিল কবিতা : বাসনা এবং প্রবন্ধ : সিদ্ধেশ্বরী কালীবাড়ী। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা মোট পাঁচটি। এর মধ্যে দু’টি কবিতা : পূর্বাপর ও পদক্ষেপ। পূর্বাপর কাব্য গ্রন্থটি বেশ পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে। এটি ১৯৬৮ সালে পারিবারিক উদ্যোগে প্রকাশিত হয়। বাকি তিনটি হলো : ঝরা পাতা (ছোট গল্প), কয়েকজন কবি প্রসঙ্গত (প্রবন্ধ) এবং অপরটি রবীন্দ্র তরুমূলে। রবীন্দ্র তরুমূলে গ্রন্থটি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন বিষয়ক। রথীন্দ্রকান্তের জনপ্রিয় কবিতাগুলো হলো : (যার কয়েক চরণ তার সমাধিস্থলে লেখা রয়েছে), জন্মদিন খবরা-খবর, একটি দুপুর এবং স্বাক্ষর ইত্যাদি। রাতের আয়না তার জনপ্রিয় ছোট গল্প। রথীন্দ্রকান্ত তাঁর বিয়ের সময়, কিশোর কবি সুকান্তের ‘ছাড়পত্রে’র মূল পাণ্ডুলিপি উপহার পান, যে প্রকাশনা থেকে ছাড়পত্র প্রকাশিত হয়েছিল, সে প্রকাশনার মালিকের কাছ থেকে। পরবর্তী সময়ে এ পাণ্ডুলিপি দিয়ে তিনি ‘সুকান্তের হস্তাক্ষরের পাণ্ডুলিপি ও অন্যান্য বিষয়াবলী’ নামের কয়েক পৃষ্ঠার একটি স্মরণিকা প্রকাশ করেন। চা খেতে খেতে কথাগুলো বললেন, রথীন্দ্রকান্তের কনিষ্ঠ সহোদর রমেন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী। যিনি অবিভক্ত বাংলা, বিভক্ত উত্তর বাংলা এবং পরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস, তার মস্তিষ্কে আজও ধরে রেখেছেন। এই প্রজন্ম তার কাছ থেকে সেই প্রজন্ম অর্থাৎ জমিদারী আমল তথা তৎকালীন হিন্দু সমাজের জীবনযাত্রা এবং তাদের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান, রীতি-নীতি ও রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরীর জীবন ও সাহিত্য সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য জানতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। অপরদিকে রথীন্দ্রকান্তের বড় দাদা রবীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী, রথীন্দ্রকান্তের অনেক আগেই মারা যান। তার পরিবারের অন্য সদস্যরা বর্তমানে কলকাতায় বসবাস করছেন। তারা কলকাতায় থাকলেও বাঙালি সমাজের ঐতিহ্য অনুযায়ী শরীয়তপুরের রথীন্দ্রকান্তের পরিবারের সাথে তাদের সবসময় যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা যায়।

 

রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী ১৯৩৬ সাল থেকে শুরু করে জীবনের শেষ পর্যন্ত অর্থাৎ ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৫২ বছর লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। এই ৫২ বছর সময়কালে তার লেখা, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ দুই বাংলার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। আসলে রথীন্দ্রকান্তের সাহিত্য প্রতিভার মূলে রয়েছে তার পরিবার। বিশেষ করে তার বাবা সূর্যকান্ত ঘটক চৌধুরী। যিনি তার সারা জীবনে তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন একটি সংগ্রহশালা। যেখানে ছিল ইংরেজি বাংলা মিলিয়ে অতি মূল্যবান গ্রন্থরাজি ও দুর্লভ পত্রপত্রিকা। সেখানে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘বঙ্গদর্শন’, কালী প্রসন্ন ঘোষ সম্পাদিত ‘বান্ধব’, প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত ‘সবুজ পত্র’ পত্রিকা যেমন ছিল, তেমনি ছিল বালাজাকের রচনার ইংরেজি অনুবাদ ১১ খণ্ডের সেট, ১৮৪৫ সালে প্রকাশিত এলিজাবেথ ব্যারেট ব্রাউনিং-এর কবিতা সংগ্রহ ইত্যাদির মতো দেড়শত বছরের প্রাচীন গ্রন্থ। যা আজও ঘটক বাড়ির দোতলার কিছুটা স্থান দখল করে রেখেছে। পরে এসব গ্রন্থের সাথে আরও নতুন নতুন বিপুল গ্রন্থরাজি যোগ হয়। এর মধ্যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, রবীন্দ্র বিষয়ক গবেষণামূলক গ্রন্থের কথা উল্লেখ করার মতো। এছাড়াও বর্তমান প্রজন্মের (দুই বাংলার) জনপ্রিয় সব লেখকদের কিছু বইও সংযোজন করেছেন রথীন্দ্রকান্তের ছেলে-পুলেরা সংগ্রহশালায়। এছাড়াও বাড়িটির দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে বিখ্যাতদের ছবিসহ তাদের আঁকা ছবি। যার মধ্যে উল্লেখ করার মতো : কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ও মাইকেল মধুসূদন দত্তের ছবি এবং লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা বিখ্যাত  ‘মোনালিসা’। পরিশেষে ঘটক বাড়ি সম্পর্কে বলতে গেলে বলা যায়‘এ বাড়িতে আসলে একসাথে ইতিহাস ও ঐতিহ্য, শিল্প ও সাহিত্য প্রাকৃতিক নৈসর্গিকতার সাক্ষাৎ মিলে।’

 

রথীন্দ্রকান্তের জীবন-দর্শন ও সাহিত্যের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে দু’টি দিক লক্ষ করা যায়। এক রবীন্দ্রনাথের উদার বিশ্ব মানবিক অনাড়ম্বর রুচিসিদ্ধতা, মানব হিতৈষীনা, স্বদেশানুরাগ, লোকায়ত ঐতিহ্যের প্রতি প্রগাঢ় অনুরাগ, সাহিত্যনিষ্ঠা এবং দায়িত্ববোধ। দুই মার্ক্সীয় দৃষ্টিভঙ্গি। পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন, ১৩৫০-এর দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ এবং কমিউনিস্টকর্মী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বৌদ্ধিক চেতনার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে অনিবার্য হয়ে ওঠে রথীন্দ্রকান্তের জীবনদর্শনে ও সাহিত্যে।

 

রথীন্দ্রকান্ত শিক্ষকতা ও সাহিত্য চর্চা ছাড়াও তার জীবদ্দশায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি স্বাধীনতার আগে ও স্বাধীনতা উত্তর প্রায় ২৬ বছর পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও তিনি ফরিদপুর অঞ্চলের তেভাগা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন এবং তৎকালীন প্রগতি লেখক সংঘের সদস্য ছিলেন। এখানে একটা আশ্চর্য বিষয় এই যে, রথীন্দ্রকান্ত জমিদারের ছেলে হয়েও তেভাগার মতো জমিদারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তিনি আজন্ম গরিব-দুখী মানুষদের দুর্দিনে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।

 

রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী ১৯৮৮ সালে (১৩৯৫ বাঃ ৩২ জৈষ্ঠ্য) মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রী রানী ঘটক চৌধুরী, তিন ছেলে, ছয় মেয়ে এবং অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে যান।


(বি: দ্র: ‘নিবন্ধটি’ মোহাম্মদ ইয়াসিন নামে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা সম্পাদিত ‘সাপ্তাহিক বিচিত্রা’য় ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৫ সালের বর্ষ : ০৭, সংখ্যা : ৪২-এ প্রকাশিত হয়। ম্যাগাজিনটির কিছু অংশ উই পোকায় খেয়ে ফেলে। যার ফলে লেখাটির দুই লাইনের কিছু অংশ উদ্বার করা যায়নি। তাই লাইন দুটি…….দিয়ে রাখা হয়েছে।)

 লেখককবিসাহিত্যিক ও প্রাক্তন শিক্ষক।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন